বাংলাদেশের সংবাদপত্রসমূহ Bangladesh All NewsPaper Newspapers List

Header Ads

Tuesday, April 21, 2020

আল্লামা শফীর শারীরিক অবস্থা ‘উন্নতির’ দিকে, করোনা টেস্টে নেগেটিভ

0 comments
শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠছেন আল্লামা আহমদ শফী। তার করোনাভাইরাসের টেস্ট করানো হয়েছে এবং তা নেগেটিভ এসেছে। বর্তমানে রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় আজগর আলী হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন তিনি। ১৪ এপ্রিল থেকে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার এই মহাপরিচালক। গত ১১ এপ্রিল আল্লামা আহমদ শফীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকায় আনা হয়।


এরইমধ্যে আজগর আলী হাসপাতালে তার করোনা টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে এবং তা নেগেটিভ এসেছে। আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের দায়িত্বশীল ও হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী সোমবার (২০ এপ্রিল) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আল্লামা আহমদ শফী বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত।


আজ সর্বশেষ খবর অনুযায়ী তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়ে স্থিতিশীল রয়েছে।’ আজিজুল হক জানান, আল্লামা আহমদ শফীর শারীরিক অবস্থা সন্তোষজনক এবং তিনি আশঙ্কামুক্ত। ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালের নিয়মিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিম রবিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় হজরতের চেকআপ শেষে এ কথা জানান।’ সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে হাসপাতালের নির্ভরযোগ্য একজন চিকিৎসক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আহমদ শফী হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন।


তিনি নিউমোনিয়ার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এখন তার অবস্থা ভালো। তার জ্ঞানও আছে। কোভিন-১৯ টেস্ট করা হয়েছে, রেজাল্ট এসেছে নেগেটিভ। তার অবস্থা ইমপ্রুভমেন্টের দিকে। আইসিইউতে থাকায় বিভাগের ইনচার্জের অধীনেই তার চিকিৎসা চলছে। পিতার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চেয়ে সোমবার একাধিকবার মাওলানা আনাস মাদানীকে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে হেফাজতের কেন্দ্রীয় একাধিক প্রভাবশালী নেতা জানিয়েছেন, দেশের শীর্ষ পর্যায়ের আলেমরা আহমদ শফীর স্বাস্থ্যের সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছেন। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন মহল থেকেও খোঁজ রাখা হচ্ছে। জানতে চাইলে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হুজুর শারীরিকভাবে অসুস্থ।



আমরা দোয়া করি ও দেশবাসীর কাছেও দোয়া চাই— হুজুরের সুস্বাস্থ্য কামনা ও দীর্ঘ হায়াতের জন্য দোয়া করতে। তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী। আল্লাহপাক তাকে পূর্ণ সুস্থতা দান করবেন।’ হেফাজতের আরেক নেতা ইঙ্গিত দেন, সবাই মাওলানা আহমদ শফীর খোঁজ রাখছেন। শুধু সরকারই না, বিভিন্ন মহল থেকেও খোঁজ রাখা হচ্ছে। হেফাজতের ঢাকার একাধিক নেতা জানান, হেফাজত নেতা আহমদ শফী আলোচনায় আসেন ২০১১ সালে। ওই বছর নারী উন্নয়ন নীতিমালা করার পর এর বিরোধিতা করে চট্টগ্রামে কর্মসূচি ডাকেন তিনি। যদিও ওই আন্দোলনে দৃশ্যত বিক্ষোভ-প্রতিবাদে বেশি কার্যকর ছিলেন ঢাকার আলেমরা।

পরে ২০১৩ সালে ব্লগার রাজীব হায়দারের (থাবা বাবা) ব্লগিংকে কেন্দ্র করে সারা দেশেই বিক্ষোভে নামে কওমি মাদ্রাসার আলেম ও শিক্ষার্থীরা। তবে ঢাকায় জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের আলেমদের অনুপস্থিতিতে পুরো দেশের আলেম সমাজের নেতৃত্বে চলে আসেন আহমদ শফী। সারা দেশে আলোচিত আল্লামা আহমদ শফী ১৯২০ সালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পাখিয়াটিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বলে জানান হেফাজত নেতা মাওলানা ইসলামাবাদী।


তিনি জানান, ১০ বছর বয়সে হাটহাজারী মাদ্রাসায় ভর্তি হন তিনি। ১৯৪১ সালে তিনি ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে চার বছর হাদিস, তাফসির, ফিকাহ শাস্ত্র অধ্যয়ন করে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন। ১৯৪৬ সালে দারুল উলুম হাটহাজারীতে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠানের মজলিসে শুরার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব পান। পরবর্তী সময়ে শায়খুল হাদিসের দায়িত্বও তিনি পালন করেন। ২০০৮ সালে তিনি কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড-বেফাকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি দারুল উলুম হাটহাজারী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওলামা সম্মেলনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ গঠন করা হয়।


তিনিই এর প্রতিষ্ঠাতা আমির মনোনীত হন। মাওলানা ইসলামাবাদী আরও জানান, আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে ১১ এপ্রিল ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে এমএ (আরবি-ইসলামিক স্টাডিজ)-এর সমমান ঘোষণা করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তার স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি, নাতনি রয়েছে। আল্লামা আহমদ শফী কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, আল হাইয়াতুল উলইয়া’র চেয়ারম্যান ও আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশের সভাপতি।

 হেফাজত নেতা মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘দেশবাসীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে। আমি হজরতের ছাত্র, খলিফা, ভক্ত, মুরিদান ও দেশবাসীকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি মহলের রটানো গুজবে বিভ্রান্ত না হতে অনুরোধ জানাই।’

No comments:

Post a Comment